মোঃ আনোয়ার হোসেন
ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ
“মানুষ ছেড়ে ক্ষেপা রে তুই মূল হারাবি, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি” সব পথ মিশে গেছে হরিশপুরে”‘কী সন্ধানে যায় সেখানে আমি কী সন্ধান’, ‘মনের মানুষ যেখানে’,‘একটা বদ হাওয়া লেগে খাচায়’, ‘বাড়ির পাশে আরশিনগর’, ‘খাচার ভিতর অচিন পাখি কমনে আসে যায়’, সত্য বল সুপথে চল” বাংলাদেশের সাধকশ্রেষ্ঠ লালন সাঁই এর এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডুতে লালনের জন্মভিটা হরিশপুর গ্রামে লালন গবেষণা একাডেমীর বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা লালন গবেষণা একাডেমির আয়োজনে মঙ্গলবার বিকালে লালন গবেষণা একাডেমির কেন্দ্রীয় কমিটি সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান,ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের আহবায়ক,ঝিনাইদহ জেলা নারী সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি হরিণাকুন্ডুর হরিশপুর-ভায়নার লালন কন্যা খ্যাত দীপ্তি রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন,ঝিনাইদহ পৌর সভার সাবেক চেয়ারম্যান এস.এম আনিছুর রহমান খোকা এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি তৈয়ব আলী জোয়ার্দার,যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মাসুদ আহমেদ সঞ্জু,হরিণাকুন্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসাইন, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম.রায়হান, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-হিসাব পরিচালক শেখ মোঃ জাকির হোসেন,সাবেক অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান টুকু,মোঃ শান্ত জোর্য়াদ্দার,আজিজুল ইসলাম,জোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাজমুল হুদা পলাশ ও যুবনেতা হাসিবুর রহমান শিপনসহ বিশিষ্ট লালন ভক্ত অনুরাগীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান আলোচক আনিছুর রহমান খোকা ও অনুষ্ঠানের সভাপতি হরিশপুর-ভায়নার লালন কন্যা খ্যাত দীপ্তি রহমান বলেন, বাউল সাধক ফকির লালন শাহের জীবন-কর্ম, জাতহীন মানবদর্শন, মরমি সঙ্গীত ও চিন্তা-চেতনা এখন আর এই হরিশপুর গ্রামের পল্লীতেই সীমাবদ্ধ নেই, দেশের সীমানা পেরিয়ে তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে। তার সঙ্গীত ও ধর্ম-দর্শন গবেষণার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের সাধকশ্রেষ্ঠ লালন সাঁই এ দেশের গ্রামীণ জীবনের ঐতিহ্যিক ভাবধারার মিশ্রণে তিনি এমন এক জীবনবিধান ও দর্শন তাঁর রচিত গানের মাধ্যমে রেখে গেছেন, যা অদ্যাবধি প্রবহমান। তাঁর প্রবর্তিত জীবনাচার ও সংগীতের ধারা দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুসরণীয় ও গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যেই আমেরিকার বিখ্যাত গবেষক ক্যারোল সলোমনের গবেষণায় ও অনুবাদে সিটি অব মিররস: সংস অব লালন সাঁই (আরশিনগর: লালন সাঁইয়ের গান) নামে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (নিউইয়র্ক, আমেরিকা) থেকে দ্বিভাষিক (ইংরেজি ও বাংলা) বিশাল আকৃতির একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া, বহু দেশে চর্চিত হচ্ছে লালন সাঁইয়ের সংগীতের ঐতিহ্য। কিন্তু লালন সাঁইয়ের নামটি উচ্চারিত হলেই বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার হরিশপুর গ্রামের নামটি সবাই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।হরিশপুরের জন্মভিটায় লালন গবেষণা একাডেমীর বিশেষ আলোচনা সভায় বক্তারা লালন ভিটায় লালনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়, লালন গবেষণা ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।