সুমন ইসলাম বাবু, লালমনিরহাট

লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কেশরঘাট এলাকার সতী নদী যুগের পর যুগ বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হতো দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবীর পেক্ষিতে এক বছর পূর্বে ব্রীজ নির্মাণের কাজ শেষ হলেও ভূমি জটিলতা থাকায় করা হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। সম্প্রতি ভূমি জটিলতা কাটিয়ে ব্রীজ ব্যবহারের উপযোগী করতে শুরু করা হয়েছে সংযোগ সড়ক নির্মানের কাজ। এতে স্বস্তি ফিরেছে লক্ষাধিক মানুষের মাঝে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৫ মার্চ ৬ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেশরঘাটে ব্রীজ নির্মাণ কাজ শরু হয়। যা শেষ হওয়ার কথা ছিলো ২০২২ সালের এর ৩০ সেপ্টেম্বর। সময় অনুযায়ী ৮১ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ব্রীজের কাজ শেষ হলেও ভূমি জটিলতায় আটকে যায় সংযোগ সড়কের কাজ।

স্থানীয়রা জানায়, কেশরঘাটে দীর্ঘ দিনের দাবির পেক্ষিতে একটি ব্রীজ নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রীজের সুফল ভোগ করতে পারছেন না এলাকাবাসী। তবে সম্প্রতি সংযোগ সড়ক নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। ব্রীজের সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হলে দুই ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হবে। খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুস সালাম (৫৫) বলেন, কেশরঘাট হয়ে জেলা শহরে যেতে যুগের পর যুগ বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে পারাপার হতে হতো। বর্ষাকালে ভোগান্তি আরো বেশি পোহাতে হতো। জনগণের ভোগান্তি নিরসনের সরকার একটি ব্রীজ নির্মাণ করে দিলেও যাতায়াতের উপযোগী না হওয়ায় ভোগান্তি সমাপ্তি হয়নি। জেলা শহর থেকে কেশরঘাট হয়ে বাড়ি ফেরা মোটরসাইকেল আরোহী মাসুক ইসলাম (৩০) বলেন, ব্রীজ হলে শেষ হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। এতে পূর্বের মতোই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কেশরঘাট ব্যতিত জেলা শহরে যেতে প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে। ফলে সময় ও ব্যয় বেশি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ভ্যানচালক আলতাফ হোসেন (৪০) বলেন, বাঁশের সাকো থাকাকালীন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হতো। বর্তমানে ব্রীজ আছে তবে রাস্তা নেই। তাই ঝুঁকিও কমেনি। তবে সংযোগ সড়ক নির্মান শেষ হলে ঝুঁকি থাকবে না। হারাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক খয়বর আলী (৪৫) বলেন, জনগনের সুবিধার জন্য ব্রীজ নির্মাণ হয়েছে। দীর্ঘদিন পর ব্রীজের দু'পাশে সড়ক নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে ব্রীজের অপর পাশে থাকা জমির ফসল বাজারজাত করণে সুবিধা হবে।

ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি শাহাজামাল বলেন, নির্ধারিত সময়ে ব্রীজ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে ভূমি জটিলতা থাকায় সংযোগ সড়কের কাজ হয়নি। সম্প্রতি এলজিইডি প্রকৌশলীর হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হওয়ায় সংযোগ সড়ক নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান হাসান (পিএমপি) বলেন, সম্প্রতি ভূমি জটিলতা সমস্যার সমাধান করে ব্রিজের একপাশে সংযোগ সড়ক কাজ শুরু করা হয়েছে। দ্রুতই যোগাযোগের জন্য উপযোগী হবে ব্রীজটি। ব্রীজটি দিয়ে চলাচল শুরু হলে উপজেলার দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবে।