নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর ধামইরহাটে বড়থা ডি আই ফাজিল মাদ্রাসায় অনুসন্ধানী নিউজে উঠে আসে যে, সেখানে তেমন কোন ছাত্রসংখ্যা নাই। এই নিউজ প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও রেজাউল ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষকগণ প্রেস ক্লাব সহ বিভিন্ন সরকারী অফিসে তদ্ববীরের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছে যেন তাদের বেতন ভাতা কোনভাবেই বন্ধ না হয়। তাদের দেখা গেছে নওগাঁ প্রেস ক্লাব, শিক্ষা অফিস ও আদালতের বারান্দায়। অনুসন্ধান টিমের সদস্যরা মাদ্রাসায় গেলে মাদ্রাসার শিক্ষকগণ, অফিস সহায়ক মাজেদুল ইসলাম কে দিয়ে সাংবাদিকদের মোটা অংকের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। প্রতিষ্ঠানের মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষিকাগণ অনুসন্ধান টিম মাদ্রাসায় প্রবেশ করলে তাদের রেজুলেশন ও মাদ্রাসার দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে অনুসন্ধান টিমের সদস্যদের বিনা অনুমতিতে ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মিজানুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরীসহ দুই জন শিক্ষিকা এবং অনুসন্ধান টিমের ক্যামেরায় বাধা প্রদান করেন তারা। এলাকার সূত্রে জানা যায় এই মাদ্রাসায় নাই কোন ছাত্র, শুধু মাদ্রাসা নামে, অনিয়ম দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে রেখেছেন শিক্ষকগণ।শিক্ষকদেরকে ছাত্র-ছাত্রীদের কথা জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন ছাত্র নাই কিন্তু আমরা তো ছাত্র যোগাড় করছি সব সময়। শিক্ষকরা আসলে সারা বছর ছাত্র ধরার নাম করে ফাকী দিয়ে বেড়ায় অর্থাৎ তারা ছাত্র ভাড়া করে বেড়ায়। এসব ভাড়া করা ছাত্র দিয়ে বছর শেষে পরীক্ষা দেওয়াতে গিয়ে বিপুল অংকের টাকা ঐ ভাড়া করা ছাত্রদের পিছনে ব্যয় করে অত্র মাদ্রাসার শিক্ষকগন, যাতে তাদের এমপিও বন্ধ না হয়। কোন বছরই তাদের রেজাল্ট ভাল না, কারন ভাড়া করা ছাত্ররা বিনা খরচে, বিনা মেধায় আলেম ও ফাজিল সনদ পায় এই মাদ্রাসা থেকে। দেখে যেন মনে হয়, বৈধভাবে ভুয়া সার্টিফিকেটের ফ্যাক্টরী এই বড়থা মাদ্রসা। ছাত্র ধরার নাম করে সারাবছর ছাত্র ভাড়া করে বেড়ানো শিক্ষকেরা বলেন যে, সব সময় ছাত্র ধরায় ব্যস্ত থাকার কারনে ক্লাশ নেবার সময় পান না নাকি তারা। এলাকা সূত্রে জানা যায় যে, আসলে কাজির কেতাবের গরু ভাড়া করা ছাত্ররা ক্লাশে হাজির থাকার প্রয়োজন হয় না। বছর শেষ কোন রকম পরীক্ষা হলে উপস্থিত হলেই সার্টিফিকেট প্রাপ্তি নিশ্চিত। অনেক সময় অনেক ভাড়া করা ছাত্র যখন পরীক্ষা দিতেই চান না, তখন ঐ শিক্ষকগন বহু রকম অর্থ লোভ, নিজ পরিবহনে ছাত্রদের তোষামোদ করে পরীক্ষার হলে পৌছে দেয়ার কাজ করে থাকেন। এমন কাজে আবার বাড়তি কিছু আয় হয় কিছু কিছু শিক্ষকদের। এর মধ্যে অন্যতম শিক্ষক আবুল কালাম গ্রুপ।
এখানকার দু একজন শিক্ষকের কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে ছাত্রর অভাব নেই কিন্তু মাদ্রাসায় নাই কোন ছাত্র। এলাকার জব্বার হোসেন বলেন অনুসন্ধান প্রতিবেদন হওয়ার পর থেকেই পাগল হয়ে উঠেছে কয়েকজন শিক্ষক বিভিন্ন মহলে তদবিরের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন, তাদের একটাই আশা এমপিও যেন বন্ধ না হয়, ছাত্রই যখন নাই তাহলে এই মাদ্রাসায় এমপিও থাকার প্রয়োজন কি, তারা তো পার্সোনাল কিন্ডার গার্ডেনে ছাত্র ভর্তি করে দেয়। এভাবে আর কতদিন ফাঁকি দিয়ে চলবে এই নামধারী শিক্ষকগণ। এলাকার রাসেল বলেন আমরা চাই খুব দ্রুত এই মাদ্রাসার এমপিও বন্ধ হোক, কারণ যেখানে নাই কোন ছাত্র, সরকার কেন তাদেরকে বেতন দিয়ে রাখবে, এদের বেতন বন্ধ হয়ে গেলে ঠিকই তারা ছাত্র সংগ্রহ করবে এবং নিয়মিত মাদ্রাসার ছাত্র থাকবে। এখন তো ছাত্র নাই তারা শুধু বসে বসে আড্ডা দেয় বাজারে, বাজারে আড্ডা ছাড়া তাদের কোন কাজ নেই। এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জনাব শহিদুল ইসলামের একটি প্রেস ব্রিফিং সূত্রে জানা যায় মাদ্রাসায় নাই কোন ছাত্র, নিয়মিত শিক্ষকগণ উপস্থিত থাকে না, বেতনভাতার জন্য দাপিয়ে বেড়ায় মাস শেষে। সভাপতির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, রমজান মাস দেখে আমি তাদের বেতন সই করে দিয়েছি। কিন্তু যেহেতু তারা তাদের অনিয়ম ও দূর্নীতি থেকে বের হতে পারছে না, তাই সামনের মাস থেকে এপিও চালু থাকার মতো ছাত্র যদি উপস্থিত দেখাতে না পারে, তাহলে তাদের বেতন বিল বা কোন ভাতা আমি আর সামনের মাস থেকে সই করবো না বলে ঘোষনা দেন তিনি। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জনাব শহিদুল ইসলাম আরো বলেন যে, আমি চাই তারা নিয়মিত ক্লাস করুক এবং অনিয়ম দুর্নীতি বাদ দিয়ে মাদ্রাসায় ঠিকমতো ছাত্র ভর্তি করুক, আমার এলাকার ছেলেমেয়েদের উপকার হবে এবং তারাও ভালোভাবে চলতে পারবে, প্রতিষ্ঠানও উপকৃত হবে বলে জানান তিনি।