(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
মিজানুর রহমান
মীরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভা
নির্বাচনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ইভিএমে ভোট
গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার সকাল ৮ টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে
ভোটারেরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তবে প্রথম বারের মতো ইভিএমে ভোট দেয়া
নিয়ে ভোটারেরা সমস্যা সম্মুখীন হয়েছেন অনেকে। ভোটরদের তালিকায় সিরিয়াল না
থাকায় অনেকে ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন। নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ভোটকে
উৎসব মূখর করেছে। দুপুর পর্যন্ত দুই পৌরসভার ১৮টি ভোট কেন্দ্রে চোখে পড়ার
মত ভোটার উপস্থিতি থাকলেও দুপুরের পর থেকে কেন্দ্রগুলো অনেকটা ফাঁকা দেখা
গেছে। দুই পৌরসভায় কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৮জন আহত হয়েছে খবর
পাওয়া গেছে।
সকাল ৯ টায় কবির মেমরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা
গেছে, নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। কিন্তু ১ ঘটনায় মাত্র ২২ ভোট কাস্ট
হয়েছে। এতে করে অনেক ভোটার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নাহিদা নামে এক ভোটার
বলেন, অনেকক্ষন লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি কিন্তু ভোট দিতে পারছি না।
সকাল ১০ টায় বারইয়ারহাট ২ নং ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্রে দেখা গেছে, ভোটারদের
উপছে পড়া ভিড়। তবে ভোট কাস্টিং একেবারে কম।
সকালে বারইয়ারহাট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট
কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। তবে ভোটগ্রহণ শুরুর
প্রায় ২ ঘন্টা এখানকার নারী বুথে ভোট পড়েছে মাত্র ২৯টি। তবে বিকেল ৩টায়
একটি বুথে গিয়ে দেখা যায় ৩৭২ ভোটের মধ্যে ২৯১টি ভোট কাস্ট হয়েছে।
কারণ জানতে ভেতরে প্রবেশ দেখা যায়, বারবার ইভিএম মেশিন ক্রুটি দেখা দেয়ায়
ভোটগ্রহণ বিলম্বিত হচ্ছে। অবশ্য এ ব্যাপারে কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, এটি মেশিনের ক্রুটি নয় ক্রুটি
ভোটারদের ইভিএম অজ্ঞতার কারণ।
এদিকে মীরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভার দুএকটি কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীর
সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আইন শৃংখলা বাহিনীর
কঠোর অবস্থানের কারণে সংঘাতের মত কোন ঘটনা ঘটেনি। বেলা সাড়ে ১১ টায়
মীরসরাই পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের নাজিরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে
ভোটারশুন্য কেন্দ্র্র দেখা গেছে। এখানে দুই কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে
ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কিছুক্ষন ভোটার উপস্থিতি ছিলো না। ইটপাটকেলের
আঘাতে কয়েকজন মহিলা আহত হয়েছে। পরে পুলিশ পাহারায় ভোটারেরা উপস্থিত হয়ে
ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বারইয়ারহাট পৌরসভায় কোন কেন্দ্রে বিএনপির
এজেন্ট দেখা যায়নি। বিএনপির মনোনিত প্রার্থী দিদারুল আলম মিয়াজী মুঠোফোনে
বার বার যোগযোগ করতে চাইলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী রেজাউল করিম খোকন বলেন, অত্যন্ত উৎসবমুখর
পরিবেশে ভোটারেরা ভোট দিয়েছেন। বিএনপিকে জনগন প্রত্যাক্ষান করায় তাদের
প্রার্থী মিথ্যাচার করছে।
জানা গেছে, মীরসরাই পৌরসভা নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন ও
সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। মীরসরাই
পৌরসভায় মোট ভোটার ১২,৮৫৫ জন। বারইয়ারহাট পৌরসভায় মেয়র পদে দুই জন।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৪ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭ প্রার্থী
প্রতিদ্বন্ধিতা করেন।। বারইয়ারহাট পৌরসভায় মোট ভোটার ৮,৬৫৫ জন।
মীরসরাই উপজেলা নির্বাচনে কর্মকর্তা ফারুক হোছাইন বলেন, ভোটার উপস্থিতি
অনেক ভালো ছিল। ভোটারের উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন। কোন ধরনের
অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর ছিলেন।
বারইয়াহাট পৌর নির্বাচনে আ’লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম খোকন পেয়েছে ৪৮৭৮
ভোটে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্ধন্ধী বিএনপি প্রার্থী দিদারুল আলম মিয়াজী
পেয়েছেন ১৩১ ভোট।