গাইবান্ধা প্রতিনিধি;
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার, বসতবাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট সহ সাতদফা বাস্তবায়নের দাবীতে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি ও কার্যালয় চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন সাঁওতালরা।
এসময় বাপ-দাদার জমিরক্ষা সহ সাতদফা দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। এর আগে পাঁচ শতাধিক আদিবাসী- বাঙালি নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে জাতীয় পতাকা, তীর-ধনুক, ঢোল-মাদল এবং দাবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কে, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, তৃষ্ণা মুরমু প্রমুখ।
কর্মসূচিতে দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহবায়ক ও জেলা বার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু, সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ হাসান দীপন, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলা শাখার আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, সাবেক ছাত্রনেতা ওমর হাবিব বাদশা, ওয়াকার্স পার্টির নেতা মৃণালকান্তি বর্মন, সাঁকোয়া ইপিজেড বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক কুশলাশীষ কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।
বক্তারা বাগদাফার্ম এলাকায় বেপজার প্রস্তাবিত একতরফা ইপিজেড নির্মাণের ঘোষণা প্রত্যাহার, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর সাঁওতালদের বাপ-দাদার জমি ফেরতসহ সাতদফা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
শেষে আদিবাসী নেতৃবৃন্দ সাতদফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমানের কাছে প্রদান করেন।
এরআগে ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট বেপজার চেয়ারম্যান গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বাগদাফার্ম এলাকায় আদিবাসী সাঁওতাল ও বাঙালিদের পৈত্রিক জমির ওপর ইপিজেড নির্মাণের ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার পর থেকেই সাঁওতালরা নিজেদের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের ঘোষণা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ পুলিশ সঙ্গে নিয়ে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ইক্ষুখামারে আখ কাটতে গেলে সাঁওতাল বাধা দেয়। এতে পুলিশের গুলিতে তিন সাঁওতাল নিহত হন। আহত হন অন্তত ৩০ জন। এরপর থেকে সাঁওতাল বাঙালি যৌথভাবে হত্যার বিচার সহ সাতদফা বাস্তবায়নের দাবী জানিয়ে আসছে।