গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনিদের রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপি নেতাও আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। এমন কি সরাসরি আওয়ামী লীগের বিরোধীতাকারী অপশক্তির নেতার ঠিকানাও হয়েছে আওয়ামী লীগে। সন্ত্রাসী ও দাগী আসামিও বাদ পড়েনি। মামলা থেকে রেহাই পেতে কিংবা পুলিশের ধরপাকড় থেকে বাঁচতে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিকলীগ গাইবান্ধা জেলা সভাপতি খাইরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শুধাংশু কুমার রায়ের স্বাক্ষরিত দলীয় পত্রে পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। দলীয় পত্র মতে জানানো হয় সংগঠনটি চলমান কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশ ক্রমে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন করা হয়েছে৷ ১১ এপ্রিল সোমবার এ কমিটির অনুমোদন করেন জেলা জাতীয় শ্রমীকলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সাবু। এছাড়াও কমিটিতে ৬ জনকে যুগ্ম আহবায়ক ও বাকি ১৪ জন-কে সদস্য করা হয়। এ কমিটি ১নং যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে মনোনীত করা হয় সুরুজ হক লিটন-কে । কমিটির ১নং যুগ্ন আহ্বায়কের রাজকান্ড যিনি শ্রমিকদলের গাইবান্ধা জেলা শাখার ৫নং সহ-সাধারণ সম্পাদকদ ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার সাবেক সক্রিয় সদস্য ছিলেন । যাহার নামে পলাশবাড়ী থানায় একাধিক নাশকতা ও সহিংসতা, পুলিশের উপর হামলার মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়া একটি হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী। বিগত সময়ে পলাশবাড়ী উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন করতে যাযা করার প্রয়োজন তিনি তাই করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন, প্রকাশ্যে হামলা, দলীয় অফিস ভাংচুর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সফল সভাপতি মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সাকোয়াতজ্জামান বাবু চেয়ারম্যানের উপর হামলাকারীদের সে সময়ের গড ফাদার পরিকল্পনাকারী খ্যাত সুরুজ হক লিটন। সেই সময়ের আলোচিত প্লাবন হত্যা মামলার জেলা দায়রা জজ আদালতের রায়ে যাবজীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ও লুপু হত্যা মামলার আসামী। যে মামলা গুলো এখনো চলমান। দূরোদর্শী চতুর এ ব্যক্তি রাজনৈতিক সব আদর্শকে বৃদ্ধাআগুলি দেখিয়ে বর্তমান পলাশবাড়ী উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক হলেন তিনি।
এ বিষয়টি মানতে কষ্ট হওয়া পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দর। সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এ কমিটি নিয়ে। তারা নব্য আওয়ামী লীগারের অনুপ্রবেশ রোধে ও উক্ত কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
বর্তমান কমিটি বিষয়ে পলাবাড়ী উপজেলার বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুজ্জামান প্রান্ত বলেন, জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ কোন সমন্বয় করেনি। মনগড়া মতো তারা কমিটি দিয়েছেন।
এবিষয়ে জানতে জাতীয় শ্রমিক লীগের গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি খাইরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শুধাংশু কুমার রায় এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের ব্যবহৃত ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম সরকার লিপন চ্যালেঞ্জ করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোন প্রকার সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগে যে নব্য অনুপ্রবেশকারীকে মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমরা ভুলে যাইনি মানব প্রাচীরের অর্তকীত ভাবে হামলার সেদিনের কথা। এর প্রতিবাদ জানাবো এবং উক্ত কমিটির বাতিলের আহবান জানাবো। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মন্ডল বলেন, বিষয়টি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপর দিকে জেলা শ্রমিকদলের নেতা কাজী ফকু সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে জানান, পলাশবাড়ীর শ্রমিকনেতা সুরুজ হক লিটন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের গাইবান্ধা জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। পলাশবাড়ীর বিএনপির নেতাকর্মীরা দাবী করেন, তিনি উপজেলা শ্রমিকদলের সাবেক সদস্য ছিলেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উক্ত কমিটি বাতিল পূর্বক উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।#