রংপুর জেলা প্রতিনিধি
পীরগঞ্জে স্ত্রীর নামে ৬ শতাংশ জমি লিখে দেয়ায় ক্ষিপ্ত ছেলেদের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছে বৃদ্ধ বাবা-মা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের কাদিরাবাদ গ্রামে। এ ব্যাপারে বাবা শফিউল আলম (৬৫) বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কাদিরাবাদ গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক শফিউল আলমের ১ম স্ত্রীর মৃত্যুর প্রায় ৬ বছর পুর্বে ছেলে মেয়েদের সম্মতিক্রমে উপজেলার অনন্তরামপুর গ্রামের মৃত আজিজুর রহমান মন্ডলের বিধবা কন্যা রিনা বেগম (৩৮) কে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। বিবাহের পর স্ত্রী রিনা বেগমের গর্ভে সন্তান সম্ভবা হওয়ায় সৎ ছেলে শামীম ও স্বপন মিয়া পিতা শফিউল ও মাতা রিনা বেগমের উপর প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের নির্যাতন সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে রিনা বেগমের গর্ভের ৪ মাসের সন্তানকে নষ্ট করেন। স্ত্রী রিনা বেগমের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামী শফিউল আলম বসতবাড়ির জন্য ৬ শতাংশ জমি লিখে দেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছেলে সরওয়ার আলম শামীম (৪৫) ও রবিউল আলম স্বপন মিয়া (৪২) ক্ষিপ্ত হয়ে মাতা রিনা বেগম ও পিতা সফিউল আলমকে গত ৬ আগস্ট নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে। ওই ৬ শতাংশ জমি সৎ মা রিনাকে কেন দেয়া হলো-এই আক্রোশে ছেলেরা স্ব-স্ত্রীক দিনভর দফায় দফায় শারীরিক নির্যাতনসহ প্রাণনাশের চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে মা রিনা বেগম ও পিতা সফিউল আলম প্রাণ ভয়ে ওই রাতেই কৌশলে সকলের অজান্তে ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রাম খালাশপীরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এ সংবাদ পেয়ে ক্ষিপ্ত ছেলেরা সেখানেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আশ্রয়দাতাসহ বৃদ্ধ বাবা-মাকে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। পরদিন সন্ধ্যায় (০৭ আগস্ট) পিতা শফিউল আলম বাদী হয়ে ২ ছেলে, ২ ছেলের বৌসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে পীরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে এসআই জামিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি দ্রত তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত (৮ আগস্ট) বৃদ্ধ বাবা-মা নিরাপত্তাহীনতার কারণে ওই আত্মীয়ের বাড়িতেই অবস্থান করছেন।