নাপা সিরাপ খেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগটি মিথ্যা বলে জানিয়েছে পুলিশ বৃহস্পতিবার ১৭ মার্চ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মায়ের ‘পরকীয়ার বলি’ হয়েছে শিশু দুটি। এরিমধ্যে অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন অভিযুক্ত নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বিষ খাইয়ে তার দুই শিশুকে হত্যা করেছেন বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।
এ ঘটনায় নিহত দুই শিশুর বাবা ইসমাঈল হোসেন বাদী হয়ে গতকাল বুধবার (১৬ মার্চ) মাঝরাতে লিমা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক সফিউল্লার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। পরে মামলায় আটক লিমাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, লিমা আশুগঞ্জের একটি চালকলে কাজ করেন। স্বামী কাজ করেন ইটভাটায়। চালকলে কাজ করার সুবাদে আরেক শ্রমিক সফিউল্লার সঙ্গে লিমার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তারা বিয়ে করারও সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি জানান, পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দুই শিশু ইয়াছিন ও মোরসালিনকে খাইয়ে হত্যা করেন মা লিমা বেগম। মৃত্যুর ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নাপা সিরাপের রিঅ্যাকশন হয়েছে বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু লিমার আচরণে প্রথমেই পুলিশের সন্দেহ হয়। অধিকতর জিজ্ঞাসার পর তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় লিমার প্রেমিক সফিউল্লাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে নাপা সিরাপ খেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই সহোদর শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পর সারা দেশে একটি নির্দিষ্ট ব্যাচে প্রস্তুত ঔষধটির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
সূত্রমতে, গত ১০ মার্চ বিকেলে আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ইটভাটা শ্রমিক মো. ইসমাইল হোসেন সুজন ও চাতাল শ্রমিক রীমা বেগমের দুই শিশু সন্তানের জ্বর হওয়ায় দুর্গাপুর বাজারের জনৈক মাইন উদ্দিনের ফার্মেসী থেকে নাপা সিরাপ কিনে খাওয়ানোর কিছুক্ষণের মধ্যে বমি করতে শুরু করে তারা। এরপর আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার এক ঘণ্টার ব্যবধানের দুই শিশুর মৃত।