____________________________
মাঈনউদ্দীন মিন্টু দৈনিক বাংলাদেশ একাত্তর সংবাদ নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ-
আমাদের সমাজের সীকৃত গুনিজনদের কথিত সম্ভোধনের অন্যতম শব্দ বুদ্ধিজীবি বা সুশিল সমাজ।
এদের অন্যতম পরিচিত শ্রদ্ধেয় নাম ড: জাফর উল্লাহ সাহেব। বিএনপি ঘরানার এই দেশ প্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধার কথায় বুঝা গেল তিনি ধর্ম-কর্মের বিষয়ে নেহায়েত উদাসীন।
তাঁর বিষয়ে লিখার আগে মনে পড়ে গেলো বহুমাত্রিক ভাষা পন্ডিত ড: মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহর কথা। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সেমিনারে বলেছিলেন!
আপনারা যারা এখানে উপস্থিত, সকলেই পন্ডিত বটে তবে যাদের মাঝে কোরআনের জ্ঞান নেই তারা হলো মুর্খ্য পন্ডিত।
জনাব জাফর উল্লাহ গেলো সপ্তাহে বলেছিলেন: সৃষ্টিকর্তা কেউ থাকলেও থাকতে পারে কিন্তু আমি এ বিষয়ে উৎসাহি নয়।
এরই প্রেক্ষিতে টকশোতে ড: এনায়েত উল্লাহ আব্বাসি সাহেব তাঁকে কোরআন হাদিছ ও আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের উদৃতি দিয়ে হালকা মোগজ ধোলাই করায় তিনি ইসলাম সম্পর্কে কৌতুহলী হয়ে কোরআন ও ইসলাম শিখতে আগ্রহি হন। প্রথমত ইসলাম তথাকথিত কোন ধর্ম নয় বরং ইসলাম হলো একটি পরিপুর্ন জীবন ব্যবস্থার নাম।
আমাদের প্রচলিত ইসলাম শিক্ষায় কোরআনের বদলে আরবী শিক্ষা পড়ানো হয়। মূলত আরবী হলো পৃথিবীর অন্চলের বা আরব দেশের ভাষা। যেই ভাষায় কোরআন নাজিল হয়েছে ঠিকই কিন্তু কোরআন বুঝার জন্য এর তরজমা ও তাফছিরের বিকল্প নেই।
জীবন সমস্যার সমাধানে কোরআন ও হাদিছের ব্যাপক শিক্ষা নেওয়ার সময় ও বয়স কোনটিই ড: জাফর উল্লাহর নেই তাই উনাকে সংক্ষিপ্ত ধারনা দিয়ে তাঁর চিন্তার পরিশুদ্ধি করাই শ্রেয়।
(১)জনাব জাফর সাহেব সম্পদে নারী পুরুষের সমতা নিয়ে কথা বলেছেন।
(২) তিনি উম্মুল মোমেনিন হযরত যয়নবে বিবাহের প্রশ্ন করেন।
(৩) তিনি পর্দার বিষয়ে সুনিদ্দিষ্ট ডকুমেন্ট চেয়েছেন।
মুহতারাম মাওলানা আব্বাসী কোরআন হাদিছের আলোকে জাফর সাহেবের প্রশ্নের দিয়েছেন। তারপরও মিডিয়ায় বসে সব শিক্ষা দেওয়া দুরুহ ব্যপার।
জনাব জাফর উল্লাহ সাহেব আপনি নিম্নলিখিত পরামর্শ গ্রহন করতে পারেন যা অল্প সময়ে আপনার নাজাতের উছিলা হতে পারে।
(১) আল্লাহর পরিচয় জানতে আপনি নাবী ও রাছুল গনের কর্ম ও জীবন ইতিহাস পড়তে পারেন, যারা সমসাময়ীক কালের সত্যবাদি ও নি:স্বার্থবাদি ছিলেন।
(২) আপনি ছিয়াছাত্তার হাদিছ যেমন: বোখারী, মুসলিম, নাছায়ী, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজা। অথবা জীবন ঘনিষ্ঠ হাদিছ গ্রন্থ রিয়াদুছ ছালেহীনের খন্ড সমুহ।
(৩) ফাইনালি আপনি বিজ্ঞান সম্মত আল কোরআনের তাফছিরে ইবনে কাছির, তাফছিরে জালালাইন, ফি জিলালিল কোরআন, তাফহীমুল কোরআনের কতিপয় সুরার তরজমা ও তাফছির পড়তে পারেন। যেমন সুরা ফাতেহা, সুরা বাক্কারা, সুরা নিসা, সুরা বনি ইসরাঈল, সুরা আন নুর, সুরা ইয়াছিন, সুরা আর রাহমান, সুরা আস সফ, সুরা ইনফিতর, সুরা ঝীলঝাল ইত্যাদি। আশাকরি আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
শেষ কথা হলো আপনার জানার জন্য সিলেবাস ছোট করার পরামর্শ হলো:- কোরআনের ভুমিকা বা কোরআন সম্পর্কিত দিকনির্দেশনা জানার জন্য “তাফহীমুল কোরআনের” শুরুর ভুমিকা সম্ভবত ২৭ পৃষ্ঠার ভুমিকাটি ২/৩ বার চোখ বুলালে বিজ্ঞান সম্মত আপনার কোরআন বুঝা জানা অনুধাবন করা সহজ হবে। আল্লাহর পরিচয়, রাসুল দ: প্রেরনের উদ্দেশ্য পরিচয়, মানুষের সৃষ্টি রহস্য, জান্নাত জাহান্নাম, বক্তা ও শ্রোতার অবস্থান পরিবর্তন, আদেশ নিষেধ, করনিয় বর্জনীয়, পুরষ্কার শাস্তি, ভয় ও হুসিয়ারী, ইহকাল পরকালের বর্ননা, কোরআন নাজিলের ইতিহাস পদ্ধতি ঐতিহাসিক পটভুমি নাজিলের প্রেক্ষাপট নানা প্রশ্নের তাৎক্ষনিক জবাব, আদালতি ফৌজদারী আইন, সন্ধি যুদ্ধনীতি শান্তি স্থাপন নাগরিক অধিকার, বেধর্মিদের অধিকার। আরবের ভৌগলিক অবস্থা, সামাজিক কালচার, নিরাপত্তা, সমইনছাফ, পরিবার সমাজ রাষ্ট্র ইতিহাস বিজ্ঞান অংক শাশ্র ভুতত্ব মহাকাশ সকল বিষয়ের স্পষ্ঠ ধারনা ভুমিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর কোরআন জানতে বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তাফছির অধ্যয়নে টিকা সমুহ অনুসরন অতিব জরুরী যাহা সংশয় দুর করার হাতিয়ার।
আপনার আগ্রহ ও জ্ঞান পিপাসায় সফল হউন এই দোয়াই করছি, মহান আল্লাহ কবুল করুন, আমিন।
(হাফিজ ছিদ্দিকী লেখক কলামিস্ট) ০৯/০২/২০২১ ইং)