রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহীতে এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন ও দাম ভালো থাকায় খুশি কৃষক। অতীতে হিমাগারে জায়গা-স্বল্পতার কারণে উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ নিয়ে চিন্তায় পড়তেন কৃষক। তবে সেই শঙ্কা এখন কেটেছে। পর্যাপ্ত কোল্ডস্টোরেজ আছে বলে জানাচ্ছেন রাজশাহীর আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। এ বছর হিমাগার মালিক সমিতি প্রতি বস্তায় ভাড়া নির্ধারণ করেছে ৫০ কেজিতে ১৫০ টাকা করে। কিন্তু সব মিলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কোল্ডস্টোরেজে ভাড়া দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা করে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদতরের তথ্যমতে, গত বছর ৩৫ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল। আর উৎপাদন হয়েছিল ৮ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। এবার জেলায় জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ৬২৯ হেক্টর। এই হিসাবে আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) পর্যান্ত জেলায় ২৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি থেকে আলু উত্তোলন করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে বাকি জমি থেকে আলু তোলা সম্পন্ন হবে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিঘায় এবার আলু চাষে খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। আর উৎপাদন হয়েছে ৮০ থেকে ১১০ মণ করে। প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছে ১০ থেকে ১১ টাকা। এর সাথে জমি থেকে আলু উত্তোলন, বাজারজাতকরণে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ মিলে প্রতি কেজি আলুর খরচ পড়ছে ১৪- ১৫ টাকা। আর জেলার স্থানীয় হাটবাজার গুলোতে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকা কেজি দরে।
রাজশাহী জেলায় সরকারি-বেসরকারিভাবে মোট ৩৬টি হিমাগার আছে। হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণ করা যাবে ৮০ লাখ বস্তা। মোহনপুর উপজেলার কৃষক এনারুল ইসলাম জানান, কয়েক বিঘা আলু লাগিয়েছি এবার। বিঘায় ৫০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। গড়ে আর ৯০ মণ করে আলু পেয়েছি। সব আলু কোল্ড স্টোরেজে রেখে দিয়েছি। দুর্গাপুর এলাকার কৃষক এনামুল, বুজরোত আলী, আলাল জানান, এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে সাথে দাম খারাপ না। কৃষক লাভবান হয়েছে এমন দাম আমরা আশা করেছিলাম। এবার আমাদের খরচ হয়েছে বিঘায় ৪৫ হাজার টাকা করে। আর প্রায় কৃষক বিঘায় ৯০ থেকে ১১০ মণ করে আলুর উৎপাদন হয়েছে। আমরা কিছু নতুন আলু বিক্রি করেছি আর সকল আলু কোল্ড স্টোরেজে রেখেছি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক উম্মে সালমা জানান, আলু চাষীদের আমরা প্রণোদনা দিয়েছিলাম। আবহাওয়া ভালো ও দাম ভালো থাকায় কৃষক লাভবান হয়েছে। ৯ টি উপজেলায় সার্বক্ষণিক আমাদের কৃষি অফিসাররা দেখভাল করেছেন। কোনো সমস্যা হলে কৃষকের সাথে গিয়ে কথা বলে উদ্যোগ নিয়েছে। রাজশাহীতে কোল্ডস্টোরেজে আলু রাখার কোনো সমস্যা নেই। সঠিকভাবে সেখানে রাখা যাচ্ছে।