মোঃ মেহেদী হাসান মুন্না, বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান, রাজশাহীঃ
বৈশাখ জুড়েই লক্ষ করা গেছে খাঁ খাঁ রোদ। প্রখর তাপ ও ভ্যাপসা গরমে পুড়ছে উত্তর অঞ্চলের গ্রীন এন্ড ক্লিন সিটি ও হযরত শাহ মখদুম (র.) পূর্ণভূমি রাজশাহী। ভ্যাপসা গরম আর তীব্র রোদে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এই গরম উপেক্ষা করে জন সাধারণের মাঝে বিনামূল্যে শরবত বিতরণ করেছেন রাজশাহী নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব শাহাদত আলী শাহু’র বড় ছেলে সাইম আলী সানি।
সোমবার (২৯ এপ্রিল ২০২৪) নগরীর আমচত্তর মোড়ে বেলা ১২.০০ টার সময় সাইম আলী সানি নিজে উপস্থিত থেকে নানা পেশার মানুষের মাঝে ঠান্ডা এই শরবত বিতরণ করে থাকেন।
এই তীব্র গরমের বিষয়ে সাইম আলী সানির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা রাজশাহীবাসী গরমে অতিষ্ঠ। নিম্ন আয়ের মানুষ সহ খেটে খাওয়া দিনমজুর, দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা অনেক কষ্ট করে রোদে পুরে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। তাই এই গরমে জন-সাধারণকে আমি ফ্রী শরবত বিতরণ করেছি। কারণ মানুষ মানুষের জন্য.. জীবন জীবনের জন্য। তাই আমি জনসাধারণ কে শরবত খাওয়াতে পেরে আমি অনেক খুশি।
এছাড়াও গত কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে রাজশাহী জেলায়। আজ চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। যা আজকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা এ মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এদিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা আবহাওয়া অফিসের।
গত কয়েকদিন ক্রমবর্ধমান হারে তাপমাত্রা বাড়ায় বিপাকে প্রাণীকুল। প্রবল গরমে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফাঁকা হয়েছে রাস্তাঘাট, কমেছে যানবাহন। আর পথচলতি মানুষের ভরসা ডাবের জল, ঠাণ্ডা পানীয় এবং আইসক্রিম। লু-হাওয়া থেকে বাঁচতে মুখে জড়িয়েছেন কাপড়।
অন্যদিকে, অনেকেই ডায়রিয়া, আমাশয়, পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। বেড়েছে বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের কষ্ট-দুর্ভোগ। গরমের তীব্রতার কারণে তৈরি হয়েছে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি। এ পর্যন্ত জেলায় হিটস্ট্রোকে মারা গেছে একজন। চিকিৎসকরা তাপদাহে বেশি করে বিশুদ্ধ পানীয় পানের এবং রাস্তাঘাটে খোলা, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
সহসাই বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকায় এমন বৈরি দশা চলবে অন্তত ২ মে পর্যন্ত, এমনটাই বলছেন আবহাওয়া সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার রাজশাহীতে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হতে পারে। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় যে খারাপ অবস্থার তৈরি হয়েছে, তা আগামী ২ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে। এর আগে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। তবে ২ মে এর পর কোথাও কোথাও ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।’
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ১৮ মে এই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিলো ২০০৫ সালের ১২ জুন। ওই দিন তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।