মিজানুর রহমান মিলন, শাজাহানপুর ( বগুড়া) প্রতিনিধি:বগুড়ার শাজাহানপুর থানার চৌকস পুলিশ অফিসার এস আই শামীম হাসান ও আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে চোরাই ট্রাক বোঝাই কয়লাসহ চোর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এঘটনায় গত ২০ মার্চ শনিবার পবিত্র কুমার সিংহ নামের এক ব্যক্তি বাদি হয়ে ৮ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাওকাঠী গ্রামের মনসুর আলী মুন্সির ছেলে জুয়েল (২৮) ও বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি গ্রামের মৃত সামছুল আলমের ছেলে মহরম আলী (৪০)।
মামলার অপর আসামীরা হলেন, শাজাহানপুর উপজেলার রহিমাবাদ বি-ব্লক এলাকার মৃত ওমর আলী ছেলে রেশন ব্যবসায়ী আব্দুর খালেক (৪৫), একই উপজেলার খলিাকান্দি গ্রামের আনছার আলী মন্ডলের ছেলে জেবিএফ ইটভাটার মালিক নুরুল ইসলাম বাদল (৪০), চোপীনগর গ্রামের মোবারক মন্ডলের ছেলে জেবিএফ ইটভাটার অপর মালিক আব্দুর রাজ্জাক বুলে (৫৫) সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন।
থানা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার দুপুরে ভৈরব বাজার ফেরীঘাট হতে ঢাকা আমিন বাজার শাপলা ব্রিক ফিল্ডে ২২.৮৭০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাক ভাড়া করেন জনৈক আশেকুর রহমান চৌধুরী নামে একজন কয়লা ব্যবসায়ী। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যস্থলে ট্রাকটি না পৌছিলে চালানে থাকা ট্রাক চালক হযরত আলীর মোবাইল নাম্বারে ফোন দিয়ে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। পরে চালান থেকে ট্রাকের নাম্বার ( ঢাকা মেট্রো-ট-২২-১৮৮৯ ) সংগ্রহ করে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ট্রাক মালিক বগুড়া সদরের চেলোপাড়ার ইটভাটা ব্যবসায়ী পবিত্র কুমার সিংহকে ফোন করে ট্রাকের কথা জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু পবিত্র কুমার সিংহ বলেন শাজাহানপুর উপজেলার খলিশাকান্দি এলাকায় তার পিকেবি নামে ইটভাটায় তার ট্রাক নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ভাড়াতে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। সাথে সাথে ইটভাটায় এসে দেখেন তার নষ্ট ট্রাকের নাম্বার প্লেট ( ঢাকা মেট্রো-ট-২২-১৮৮৯ ) ও কাগজপত্র চুরি হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে তার পার্শ্ববর্তি জেবিএফ নামে একটি ইটভাটায় তার চুরি হওয়া নাম্বার প্লেট লাগানো একটি ট্রাক থেকে কয়লা আনলোড করার খবর পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেন পবিত্র কুমার সিংহ। খবর পেয়ে থানা পুলিশ গিয়ে চোর চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেন এবং ট্রাকসহ কয়লা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এসময় হযরত আলী নামে চোর চক্রের অপর এক সদস্য পালিয়ে যায়। এঘটনায় পিকেবি ইটভাটা মালিক পবিত্র কুমার সিংহ বাদি হয়ে ৮জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
জেবিএফ ইটভাটার মালিক আব্দুর রাজ্জাক বুলে জানান, তার ব্যবসায়ীক পার্টনার নুরুল ইসলাম বাদল বি-ব্লকের রেশন ব্যবসায়ী আব্দুল খালেকের কাছ থেকে বাজার মূল্যে একট্রাক কয়লা ক্রয় করেছেন। এটাযে চোরাই কয়লা হবে তা তাদের জানা ছিল না।
রেশন ব্যবসায়ী আব্দুল খালেকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কয়লা বোঝাই ট্রাকটিও চোরাই। ট্রাকের মালিক জনৈক কামাল জোমাদ্দার বরিশার জেলার বাকেরগঞ্জ থানায় জিডি করেছেন। এছাড়া ট্রাকের চালক গ্রেপ্তাকৃত জুয়েল মুন্সির বাবাও বাকেরগঞ্জ থানায় তার ছেলে নিখোঁজ হয়েছে মর্মে জিডি করেছেন। মূলত এই চোর চক্রটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ট্রাকের নাম্বার প্লেট চুরি করে কিম্বা ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে মালামাল বহনের নামে প্রতারনা করে আসছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অপর আসামীকে গ্রেপ্তার করতে কাজ করছে পুলিশ।