জয়পুরহাট প্রতিনিধি
বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার ঘটনা বর্তমানে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এর মধ্যে স্বামী কিংবা স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় পরবর্তী বিয়ের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। এসব প্রতারণামূলক ঘটনা থেকে বিভিন্ন সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক জটিলতা ও সহিংসতা্র সৃষ্টি হয় যা বেশিরভাগ সময় আদালতে মোকদ্দমায় গড়ায়।
নওগাঁ জেলার মান্দা থানার সাহাপুকুরিয়া গ্রামের নিরাঞ্জনের
মেয়ে পপি সরকারের সঙ্গে জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বলি গ্রামের আশুতোষ র্বরমনের ছেলে মানিক সরকার পপির সরকারের হিন্দু শাস্ত্রমতে (১মার্চ) ২০১৮ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নিয়ম ও প্রথা মেনে পপির বাবা নিরাঞ্জনে মেয়ের সুখের জন্য নগদ টাকা, ব্যবহাযর্ আসবাবপত্র ও স্বণার্লঙ্কার যৌতুক হিসেবে ছেলেকে প্রদান করেন। কিন্তু বিধিবাম! একবছর বছর যেতে না যেতেই পপি সরকার প্রথম স্ত্রী পপিকে কোনো কিছু না জানিয়ে কিংবা তার অনুমতি ব্যতিরেকে আরেকটি বিয়ে করেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শ্রাবনী নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করে সুখে বসবাস শুরু করেন। এদিকে পপি সরকার দীঘির্দন ধরে স্বামী সংসারবিহীন নিদারুণ কষ্টে জীবন অতিবাহিত করতে থাকেন। কিন্তু হিন্দু ধমের্র বিধান মতে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরিষ্কার বিধান না থাকায় পপি নিয়মকানুন মেনে চলতে হচ্ছে। হিন্দু আইনে তালাক দেয়ার কোনো প্রকার বিধান না থাকায় মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত পপি সরকার স্ত্রী হয়েই বেঁচে থাকতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে পপি সরকার কে ভরণপোষণ দেবে? কীভাবে কাটবে তার বাকি জীবন। যদি তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে তবে কেন পপি পারবে না। এটি একটি মানবিক প্রশ্নের দাবিদার।
হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ সম্ভব নয়। একবার বিয়ে হয়ে গেলে আর ডিভোর্স বা তালাক সম্ভব না। তবে, অপ্রিয় হলেও এটাই সত্যি যে হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ না থাকার ফলে একজন হিন্দু স্ত্রী মনে মনে তার স্বামীর মৃত্যু কামনা করা ছাড়া আর বৈধ কিছুই করতে পারবে না। কেননা, বাংলাদেশে একজন হিন্দু স্ত্রী তার স্বামীর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বামীর দ্বারা শারীরিক, মানসিক যত প্রকারের নির্যাতনই হোক না কেন, বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারবেন না। নিষ্ঠুরতা যে স্ত্রীর উপর কম হয় না তা কিন্তু নয়। তাছাড়া, আপনি একজন হিন্দু পুরুষ, আপনি জানেন যে আপনার স্ত্রী কোন মতেই আপনার জীবদ্দশায় আপনাকে তালাক দিতে পারবে না, অন্য কোথাও বিয়ে করতে পারে না
কান্না জরিত কন্ঠে পপি সারকার সাংবাদিকদের বলেন মানিক সব সময় সংসারে অশান্তি শুরু করে। আমাকে ডিভর্স দিতে বলে। কিন্তু আমি সংসার করবো বলে তাকে অনেক বার বুঝানোর চেষ্টা করি তার পরিবার ও আমাকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য মিথ্যা অপবাদ দেয়। মানিক লোভে পরে (নার্স )শ্রাবণী নামের একি মেয়ের সাথে পরোকীয়ায় লিপ্ত হয়ে আমার অনুমতি ছাড়া (৩১আগস্ট)২০২২ রাত্রে তার পরিবার তাকে বিয়ে দেয়। আমি আমার সংসার ফিরে পেতে চাই৷ আপনারা আমার জন্য কিছু করেন আমাদের ধর্মে ২য় বিয়ে হয়না আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা কামনা করছি৷ আমার বিবাহিত জীবন আমি বাঁচতে চাই৷
পপি আরও বলেন (গত শুক্রবার ৯ সেপটেম্বর) বিকেলে মাত্রাই ইউনিয়ন কর্যালয়ে লজিক চেয়ারম্যনের মাধ্যমে একটি বৈঠক ছিলো মানিক স্থানিয় ছেলে হওয়াই চেয়াম্যন তার পক্ষে ছাপায় গাইছে এখন আইনের আশ্রয় ছারা আমার কোন পথ নেই৷
অভিযুক্ত মানিকের সংঙ্গে একধিবার মোঠ ফোনে যোগা যোগ করা হলেও ফোনটি বন্ধ থাকায় তার কোন ব্যক্তব্য পাওয়া যায়নি৷
এবিষয়ে জান্তে চাইলে মাত্রাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যন আনম শওকত হাবিব তালুকদার লজিক জানান আমি উভয় পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি৷ যেহেত তারা হিন্দু ধর্মের দেশে আইন আছে এই আইনের প্রতিকার যেনো পায়৷ মেয়েটি৷
এ্যডঃ রায়হান আলী বলেন৷ বতর্মান সরকার নারীর অধিকারের সবোর্চ্চ সম্মানের কথা বিবেচনায় রেখে নারী বৈষম্য দূরীকরণে কাযর্কর ভূমিকা রাখবে। শুধু নারী নিযার্তন বন্ধ কিংবা নারী-পুরুষের সমান অধিকার বুলি ফোটালে হবে না, পারিবারিক আইনের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণে অভিন্ন পারিবারিক আইন গ্রহণের এ উদ্যোগকে আরও সক্রিয় করতে হবে। তবেই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে, নারীর অধিকার হবে৷