ছৈয়দ আজিম টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে অপহরণ চক্রের মাষ্টার মাইন্ডসহ ৫ অপহরণকারী আটক।
দীর্ঘ ২২ দিন আগে অপহরণ হওয়া মাদ্রাসা ছাত্র শিশু ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ (৬) কে অপহরণ কারীর হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণকারীদের কাছ থেকে মুক্তিপণের নগদ ৪ লাখ টাকা, ব্যবহৃত ১টি সিএনজি, ও ৪টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেন।
উক্ত অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ ওসমান গনি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উখিয়া-টেকনাফে দায়িত্বরত সার্কেল মুহাম্মদ রাসেল (পিপিএম-সেবা) উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, গত ৯ মার্চ সকালে টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে ১ম শ্রেনী মাদ্রাসা ছাত্র শিশু ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
গত ১০ মার্চ ছাত্র শিশুটির মা বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানার মামলা নং- ২০/১৩৭, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর অক্ষত অবস্থায় শিশু ভিকটিমকে উদ্ধার করার পাশাপাশি অপহরণে জড়িত অপরাধীদের ধরতে
জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ ওসমান গনির নেতৃত্বে পুলিশের বেশ কয়েকটি অভিযানিক দল অভিযানিক কার্যক্রম শুরু করে।
অভিযান চলাকালীন সময়ে জানতে পারে শিশুটিকে অপহরণ করেছে অপরাধ চক্রের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড আনোয়ার সাদেক,রোহিঙ্গা নাছের,মাজুমার নেতৃত্বে উম্মে সালমা,শাহীন এবং সিএনজি ড্রাইভার নাসির আলম। তারা শিশু ছোয়াদ বিন আবদুল্লাহকে মাদ্রাসা থেকে বাসায় যাওয়ার পথে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এরপর উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপরাধ চক্রের সহযোগী সিএনজি ড্রাইভার নাছির এবং উম্মে সালমাকে আটক করে।
ধৃত দুই অপহরণকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় মাস্টারমাইন্ড আনোয়ার সাদেক,শাহীন,তোহা, নাগু ডাকাত, মধু, নারী হোসনে আরা এবং তাদের পরিবারের সদ্যস্যরা অপহরণ চক্রের সক্রিয় সদস্য।
অপহরণকারীরা পুলিশের অভিযানিক কার্যক্রমে দিশেহারা হয়ে মুক্তিপণ আদায় কৌশল হিসাবে ভিকটিমকে মহেশখালী কালারমার ছড়া দুর্গম পাহাড়ী এলাকা নিয়ে গিয়ে ভিকটিমের মায়ের মোবাইলে ফোন দিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। এমনকি মুক্তিপন না দিলে শিশুটি হত্যা করার হুমকি প্রদান করে। মুক্তিপন আদায়ের লক্ষ্যে অপহৃত শিশুকে বিভিন্ন সময় নির্মমভাবে মারধর করে ভিকটিমের মাকে এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের কান্নাকাটির শব্দ শুনাতো।
অবশেষে দীর্ঘ ২২ দিনের অক্ষত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করার পাশাপাশি অপহরণ চক্রের মাস্টার মাইন্ড আনোয়ার সাদেকসহ অপহরণ চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করতে করেন। উদ্ধার করা হয় মুক্তিপণের নগদ ৪ লাখ টাকা,১টি সিএনজি।
পুলিশের চলমান এই সাড়াঁশি অভিযানে অপহরণ চক্রের সাথে জড়িত ১৭ জন আটক করা হয়েছে। তাদের সাথে জড়িত আরো বেশ কয়েকজন অপহরণকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশের অভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা।