এম, নুর নবী আহমেদ, দৈনিক বাংলাদেশ ৭১ সংবাদ।
ডিসি এসপি ওসিদেরকে আসামি করবেন কাদের মির্জা : শনিবার হরতাল
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় শনিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাপরাশিরহাট বাজারে কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদল অনুসারী আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৫০-৬০জন নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের মধ্যে কোম্পানীগন্ঞ্জ উপজেলা সরকারি হাসপাতাল ও গুরুতর অবস্থা কয়েকজনকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হলো, আহতদেরকে কাদের মির্জা নিজের অনুসারী দাবী করে এবং তাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় ফেসবুক লাইভে এসে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচী ঘোষণা করেন।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনাস্থল থেকে আসার সময় চরকাঁকড়া টেকের বাজার নামক স্থানে বাদল গ্রুপের সদস্য হিসেবে পরিচিত ফখরুল ইসলাম সবুজের নেতৃতে রাস্তায় ব্যারিকেড দিলে আবদুল কাদের মির্জা গাড়ীবহর সহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কয়েক ঘন্টা পর কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ, অতিরিক্ত রিজার্ভ পুলিশ ও র্যাবের কয়েকটি গাড়ী গিয়ে সড়ক অবরোধ তুলে দিয়ে মেয়র কাদের মির্জাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
তিনি বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে নেতাকর্মী ও সাংবাদিকের জানান, এমপি একরাম চৌধুরীর বাড়ীতে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বৈঠক শেষে সন্ত্রাসীদের দু’ভাগে বিভক্ত করে আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এরমধ্যে বাদলের নেতৃত্বে চারপাশিরহাট ও সবুজের নেতৃত্বে টেকের বাজার হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মিজানুর রহমান বাদল, চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, নজরুল ইসলাম শাহীন, হাসিবুস শাহীদ আলোক, ফখরুল ইসলাম সবুজ, ভাগিনা ফখরুল ইসলাম রাহাত, মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু, মাহবুবুর রহমান আরিফ অস্ত্র নিয়ে গুলি করেছে।
কাদের মির্জা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এ আক্রমন সম্ভব নয়। এজন্য আমি মামলায় নোয়াখালীর ডিসি, এসপি, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ও পরিদর্শক (তদন্ত) কেও আসামী করবো। এছাড়া ফেনীর নিজাম হাজারী এমপি, নোয়াখালীর একরামুল করিম চৌধুরী এমপি, ফেনী পৌরসভার মেয়র স্বপন মিয়াজী, দাগনভুঞা উপজেলার চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপন, নোয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন জেহান, সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব বেলায়েত হোসেন, সেতুমন্ত্রীর এপিএস মহিতুল, পিএ আবদুল মতিন ও পিআরও নাছেরকেও এ মামলায় আসামী করা হবে।
অন্যদিকে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল এ ঘটনার জন্য মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার সমর্থকদেরকে দায়ি করেছেন। তিনি তার ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, গত ২ মাস যাবত আবদুল কাদের মির্জা বিভিন্ন মাধ্যমে দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের অনেক সিনিয়র নেতাদেরকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আসছেন। এর প্রতিবাদে একটি সংবাদ সম্মেলন করার জন্য শুক্রবার বিকেলে তার এলাকা চরফকিরা ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একটি প্রস্তুতি মূলক বৈঠকের ডাক দিলে কাদের মির্জার নেতৃত্বে শত শত অস্ত্রধারী সেখানে হামলা চালায়। এতে তার বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চারপরাশিরহাট বাজারে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদল সমর্থিত আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। আহতদেরকে কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী ও ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ, শর্টগানের ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ।