মোঃ রাজন ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার
দৈনিক বাংলাদেশ ৭১ সংবাদ
রাজশাহীতে রাজনৈতিক দ্বন্দ ও মাদক সেবনে কিশোরগ্যাংকে উৎসাহিত করার প্রতিবাদ করায় নগরীর শাহমুখদুম থানা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মোস্তফার শাহমাুখদুম থানার সামনে অবস্থিত তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটছে ৯ অক্টোবর রাতে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মদিন উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল শেষে (রাত ৮.৩০ মিঃ আনুমানিক)। পরে শাহমুখদুম থানা পুলিশের সহযোগিতায় উত্তপ্ত পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে আনে। এরপর হামলার বিষয়টি মোস্তফা জানলে পুলিশের সহযোগিতায় সমাধানের চেষ্টা করা হয়। কার্যালয়ে হামলার রেশ না কাটতেই ১০ তারিখ দুপুরে আবারও দেশীও ধারালো অস্ত্র ও হাতুরি দিয়ে হামলা চালিয়ে অবসিক দাস আয়ন নামের এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীর মাথা ফাটিয়ে ক্ষমতার জানান রাতের হামলাকারি দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি নিয়ে মহানগরের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও থানা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মোস্তফা বলেন, আমার বাড়ি শাহমুখদুম থানা সংলগ্ন। আমি দীর্ঘদিন এই এলাকায় মাদক বিরোধী কার্যক্রমের সাথে কাজ করছি। এই কারনে এই এলকার বিখ্যাত ও কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী আঃ মজিদের ছেলে রাজিব মোল্লার চক্ষুশুল হয়েছি। এই এলাকায় আমার রাজনৈতিক সুনাম রয়েছে। কিন্তু এই রাজিব মাদক দিয়ে যুব সমাজকে ধংস করছে। আমি তাকে বার বার নিষেধ করেছি। ফল হিসেবে সে আমাকে শত্রুতে রুপান্তরিত করেছে। রাজিব কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজিব ও তার পুরো পরিবার বিএনপি করে। সে যুবদলের ক্যাডার নামে পরিচিত কিন্তু অনেকে মাদক রাজিব নামেও চেনে। আমি আগামীতে রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী। অথচ আমাকে ও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে তার ইশারায় গতকাল রাতে আমার কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। হামলার সময় তার ছোটভাই রাসেল উপস্থিত ছিল। আমার নিরাপরাধ কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। আবার পরের দিন দুপুরে আমার স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীকে হাতুরি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য গুরুত্বর আঘাত করা হয়েছে।
পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুক্তভোগী অবসিক দাস অয়নের সাথে (জ্ঞান ফিরলে) কথা বললে তিনি জানান, আমি ও আমার নেতা মোস্তফা ভাই মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। এছাড়াও আমি স্বেচ্ছাসেবক লীগের ক্ষুদ্র কর্মী। গতকাল রাতে আমাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে একবার হামলা করেছে। বিষয়টি নিয়ে মামলা করবো বললে, তারা পরিকল্পিতভাবে দুপুর আনুমানিক ২.৪৫ টার দিকে পেছন থেকে হাতুরি দিয়ে মারধর করে। পরে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি রাজিবের চাচাত ভাই আরিফ সহ কয়েকজন। তাদের সকলের হাতে ছিল ধারলো অস্ত্র, লোহার রড ও লোহার পাইপ। তবে আরিফের হাতে থাকা হাতুরি দিয়ে প্রথম আঘাত করেছে। পিছন ফিরলে আমাকে এলোপাতারি মারধর শুরু করে। পরে আমি বাক চিৎকার দিয়ে দৌড় দেয়। পরে এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে উদ্ধার করে মেডিকেলে ভর্তি করে। পরে ঐ এলকার মাদক সম্রাট খ্যাত রাজিব মোল্লার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, রাজিব মোল্লা এলাকায় মাদক সম্রাট ও ভুমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। কয়েকদিন আগেও তার রোষানলের শিকার হয়ে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর এলাকার আঃ রাজ্জাকের ছেলে শিবলী (৩৭) নামের এক ব্যক্তি আত্নহত্যা করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এই শিবলীর কাছে একটি জমি বিক্রি করে রাজিব। পরে টাকা নেওয়া হয়ে গেলে সেই জমিটি রাজিব পুনরায় দখল করতে চাইলে সেই টাকার শোকেই আত্নহত্যা করেছে বলে এলাকাবাসি অভিযোগ করে। তবে এলাকাবাসি আরও জানায়, এই রাজিব মাদক দিয়ে এলাকার যুবক ছেলেদের মাথা নষ্ট করছে। তার শেল্টারে গড়ে উঠেছে কিশোরগ্যাং। তবে রাজিব মোল্লার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে তাকে বার বার ফোন দিলে তিনি ফোন কেটে দেন।
এবিষয়ে মহানগরীর মাহমুখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসানের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, গত রাতে একটি ঘটনা ঘটেছে সত্য। সেখানে আমাদের পুলিশ উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করেছে। আজ দুপুরেও মারধরের একটি ঘটনার খবর পেয়েছি। এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। তবে ভিক্টিমরা আমার সাথে যোগাযোগ করছে মামলা করার উদ্দেশ্যে। মামলা হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।