ইন্দ্রজিৎ টিকাদার,
বটিয়াঘাটা (খুলনা)প্রতিনিধিঃ
আর মাত্র ৬ দিন পর আগামী ৭ জানুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে এ সংসদীয় আসন (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) উপজেলা মিলে খুলনা -১ আসন থেকে বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন প্রার্থী। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন যথাক্রমে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি ননী গোপাল মন্ডল, ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সচিব ডক্টর প্রশান্ত কুমার রায়, তৃণমূল বিএনপি মনোনীত সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক ও জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী কাজী হাসানুর রশীদ। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় স্ব -স্ব প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে নানা কৌশলে ভোটারদের জানান দিতে ও সমর্থন পেতে প্রচার প্রচারণা শুরু করছে জোরে সোরে। প্রার্থীরা ইতিমধ্যে প্রচার প্রচারনা অংশ হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় দলীয় স্ব -স্ব অনুসারীদের সাথে নিয়ে জনসভা, মাইকিং, পোস্টারিং, বাজারে ও জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি পথসভা ও প্রতিশ্রুতি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠক ইত্যাদি। এছাড়াও ভোটাররা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে নির্বাচনী সর্বশেষ আপডেট জানতে সার্বক্ষণিক দৃষ্টি রাখছেন। একমাত্র আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি ননী গোপাল মন্ডলের নৌকা প্রতীকের পক্ষে জনসভা করতে দেখা গিয়েছে। তবে এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সকল প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে প্রার্থীর বিভিন্ন গুণাবলী ও প্রতিশ্রুতি সম্বলিত শ্লোগান ও সঙ্গীত। সব মিলিয়ে সংসদীয় খুলনা -১ আসনের বিভিন্ন চায়ের দোকান সহ সর্বত্র নির্বাচনী উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এ আসনটিতে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি ননী গোপাল মন্ডলের সাথে আওয়ামীলীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সচিব ডক্টর প্রশান্ত কুমার রায়ের মধ্যে লড়াই হতে পারে। অপরদিকে অন্য একটি রাজনৈতিক অভিজ্ঞ সচেতন মহল ধারণা করছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সচিব ডক্টর প্রশান্ত কুমার রায়ের ঈগল প্রতীকের সাথে তৃণমূল বিএনপি মনোনীত সোনালী আঁশ প্রতীকের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে। এব্যাপারে জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী কাজী হাসানুর রশিদের প্রচার প্রচারণা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কিছু সমস্যার কারণে আমি নিজেকে এখনো গুছিয়ে নিতে পারিনি। তাই লিফলেট বিতরণ করে ভোটারদের জানান দিচ্ছি। তবে ১ জানুয়ারি থেকে জোরে সোরে প্রচার প্রচারণা শুরু করবো। তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক তার সোনালী আঁশ প্রতীকে মোটামুটি জোরে সোরে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, এ সংসদীয় আসনটিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অবহিত মানুষের বসবাস। আওয়ামীলীগ এখান থেকে বারবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেও এখনকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সহ সকল সম্প্রদায়ের অবহেলিত মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমি নির্বাচিত হলে ওই সকল পিছিয়ে পড়া ও অবহেলিত মানুষের পাশে থেকে তাদের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করবো। এ ব্যাপারে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সচিব ডক্টর প্রশান্ত কুমার রায় এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি বাংলাদেশ সরকারের সচিবের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে সরকারের দেয়া দায়িত্ব পেয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে ব্যাপক কাজ করেছি। সচিবের দায়িত্ব থেকে অবসরে গিয়ে গত ৩ বছর যাবৎ আমার জন্মভূমি খুলনা -১ আসনের (বটিয়াঘাটা-দাকোপ) উপজেলার ওলি গলি চষে বেড়িয়েছি এবং সাধারণ মানুষের বিভিন্ন সমস্যা নিরুপন করেছি। পাশাপাশি তাৎক্ষণিক ভাবে যতটুকু সম্ভব সমস্যা নিরসন করার চেষ্টাও করছি। অতি মহামারিতে ও সকল সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের বিভিন্ন উৎসবে উপস্থিত থেকে শরিক হয়ে কুশল বিনিময় করেছি। আমাকে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন বোর্ড নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেয়নি, তা কি হয়েছে ? সাধারণ ভোটাররা আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে বলে আমার আশা ও বিশ্বাস। এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সাবেক এমপি ননী গোপাল মন্ডল এ প্রতিবেদককে বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে নাবালক ও অবিবাহিত অবস্থায় ছাত্রলীগ থেকে ধরে এনে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন । এরপর এলাকার মানুষ আমাকে ধারাবাহিক ভাবে ৬ বার ইউপি চেয়ারম্যান, একবার উপজেলা চেয়ারম্যান এবং একবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। আর আমি জনগণের দেয়া দ্বায়িত্ব নিয়ে জনগণের সাথে কোন প্রতারনা করিনি। আমি সব সময় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের ভাগ্য উন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি। তাই জনগণ আগামীতে আওয়ামীলীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে এবং দেশের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিয়ে আ’লীগকে তথাপি আমাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবে। তাই আগামী ৭ জানুয়ারি কে হচ্ছেন (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) মিলে খুলনা-১আসনের সংসদ সদস্য তা শুধু মাত্র দেখার অপেক্ষা। সব মিলিয়ে সংসদীয় খুলনা-১ আসনে নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, নির্বাচনী উৎসবের আমেজ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।