নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার বড়থা ডি আই ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম খোদাদাদের বিরুদ্ধে বড়থা ডি আই ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক জনাব আবুল কালাম আজাদ কর্তৃক পূনরায় প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে, আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ধামইরহাট উপজেলা ডিজিটাল প্রেসক্লাবে। তিনি বলেন যে, এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম খোদাদাদ কয়েকদিন আগে একটি জালিয়াতি মামলায় পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাগারে ছিলেন। কারাগারে যাওয়ার পর নিয়ম মাফিক তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে অত্র মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, কিন্তু তিনি প্রতিষ্ঠানের সকল কাগজপত্র, সিল, সরকারী মোবাইল সিম, ইমেইলসহ পাসওয়ার্ড যা কি না সরকারী যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়, এমন গুরুত্বপূর্ণ অনেককিছু তার কাছে এখনো রেখে দিয়েছেন ও প্রতিষ্ঠানের জরুরী সরকারী যোগাযোগের জন্য ভারপ্রাপ্ত বর্তমান অধ্যক্ষ জনাব হারুন অর রশিদকে তার বাসভবনে বার বার যেতে হচ্ছে বা নুরল ইসলাম খোদাদাদ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকদের ডেকে দফায় দফায় সেখানে মাদ্রাসা অফিস বানিয়ে তার নিয়ন্ত্রনে মাদাসার সকল বিষয় আলোচনা পর্যালোচনা ও মাদ্রাসা পরিচালনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে আসছেন। তাহলে তিনি সাময়ীক বরখাস্ত হলেন কিভাবে? আমাদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব হারুন অর রশিদ, তার কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস, সীম ও ইমেইল পাসওয়ার্ড চাইলে, তিনি দিতে অস্বীকার করেন এবং সাবেক অধ্যক্ষ জনাব নুরল ইসলাম জানান যে, আমি তো বরখাস্তই হই নাই, আমি কয়েকদিনের মধ্যেই আদালতের নিষ্পত্তি নিয়ে আবারো অধ্যক্ষের চেয়ারে বসবো, তাই এসকলের নিয়ন্ত্রন ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার নিয়ন্ত্রন আমার কাছেই থাকবে। এমতাবস্তায় মাদ্রাসা সঠিকভাবে চলার রাস্তা দুর্নীতবাজ সাবেক অধ্যক্ষের হাতেই আছে, তিনি নামেই সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় আছেন। তার বরখাস্ত অবস্থায়ও তিনি বিভিন্ন জনের থেকে প্রতিষ্ঠানের কিছু পদ শুন্য দেখিয়ে ঘুঁষ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানের আয়া পদে চাকুরীরত রাশেদা ও মোজাম্মেলকে এই দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ২২ বছর আগে তাদের বাড়িঘর বিক্রি করা ঘুঁষের টাকার বিনিময়ে চাকুরী দিয়েছিলেন, কিন্তু ঐ সকল কর্মচারী এখনো বেতন না পাওয়ায়, আবার নুরল ইসলাম খোদাদাদ তাদের কিছু অর্থ দিয়ে স্বেচ্ছায় ইস্তফা দেয়ার জন্য দর কষাকষি করছেন, যাতে ঐ সকল পদ শূন্য দেখিয়ে নতুন করে নিয়োগ দেয়া যায় ও বিপুল অংকের ঘুষ নেয়া যায়। ইতিমধ্যেই গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত ছাড়ায় তিনি নিজে নিজেই পত্রিকায় অফিস সহকারী শুন্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এক বা একাধিক প্রার্থীর থেকে প্রায় আবারো ৩০ লক্ষ বা অধিক টাকা ঘুষ বানিজ্য করেছেন বলে সকলেই বলাবলি করছে। সাময়ীক বরখাস্ত থাকা অবস্থায়ও সাবেক অধ্যক্ষ নুরল ইসলাম খোদাদাদ এলাকায় ঘুঁষ গ্রহনের একটা রাজ্য তৈরী করে ফেলেছেন এই বলে যে, আমি সভাপতির নির্দেশে সব কিছু করছি, আর সভাপতি আমাকে বরখাস্ত করতে পারেন না আইন অনুযায়ী, ফলে আমি বরখাস্ত হই নাই, আমিই অধ্যক্ষ ছিলাম ও আছি। এতে শিক্ষক কর্মচারী ও এলাকাবাসীর মনে সে সাবেক হওয়া সত্ত্বেও একটি দিধাদ্বন্দ ও বিশ্বাসের জায়গা তৈরী হয়েছে এবং এই সুযোগকে পূঁজী করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে সাবেক অধ্যক্ষ তার ঘুঁষ, দূর্নীতি চালিয়েই যাচ্ছেন ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে যাচ্ছেন। কিন্তু সভাপতি জনাব শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে, সাবেক অধ্যক্ষ নুরল ইসলামের নতুন করে দূর্নীতির কথা আমার কানে এসেছে, নূরল ইসলাম খোদাদাদকে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তক্রমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তার বেতন বন্ধ আছে, তিনি বেতনের জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছেন যাতে নতুন করে বেতন ভাতার জন্য গভর্নিং বডির একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন জনাব নুরল ইসলাম খোদাদাদ। তিনি আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হুঙ্কার দিয়ে গালিগালাজ করে দাবী করছেন যে, তিনি সাময়ীক বরখাস্ত হন নাই বা তাকে সাময়ীক বরখাস্ত করা আমার সঠিক সিদ্ধান্ত হয় নাই, এসকলের সব কিছুর প্রমান আছে আমার কাছে। জনাব শহিদুল ইসলাম আরো জানান যে, যেহেতু সাবেক অধ্যক্ষ বরখাস্ত হন নাই বলে দাবী করছেন, সেই সাথে আদালতের রায়ে জেল খাটার জন্য তিনি সাময়ীক বরখাস্ত হওয়া সত্ত্বেও আজো তার বিরুদ্ধে বর্তমান মামলা চলমানসহ আরো কয়েকটি মামলা চলমান আছে বলে আমরা জানতে পেরেছি, তাই তিনি বর্তমান মামলার নিষ্পত্তির জন্য কোন কাগজ আমার নিকট উপস্থাপন করলেও এলাকাবাসীর মতামত, সুশীল সমাজের মতামত, গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত ছাড়া তাঁকে আমি পূনর্বহাল করার জন্য কোন কাগজে স্বাক্ষর করবো না। জনাব নুরল ইসলাম যেহেতু আমার নাম করে ঘুঁষ নিচ্ছে ও তিনি বরখাস্ত হন নাই মর্মে দাবী করছেন, সেই হেতু এমন দূর্নীতিবাজ মানুষ বরখাস্ত হওয়া সত্ত্বেও নিজে নিজেই কিভাবে মাদ্রাসা চালাচ্ছেন? এটা তো বড় ভয়ঙ্কর ব্যপার, এজন্য তিনি কিভাবে নিজে নিজে মাদ্রাসার চেয়ারে ফিরে আসেন তা দেখার বিষয়। যেহেতু সে আমার নামে ঘুঁষ খেয়েছে ও খাচ্ছে, আমি তার ঘুঁষ খাওয়া চিরদিনের জন্য বের করে ছাড়বো। জনাব নুরল ইসলাম সাময়ীক বরখাস্ত মানেন নাই (প্রমান আছে), তাই তার স্বপদে ফিরে আসার দুয়ার আমার নিকট বন্ধ হয়ে গেল, তিনি যদি উপযুক্ত ডকুমেন্টস আমার নিকট এলাকাবাসীর শত সুপারিশসহ দাখিলও করেন, তাহলে আমি কখনোই তার অধ্যক্ষের পদে ফিরার জন্য তার পক্ষে বোর্ডের কোন সিদ্ধান্তে সই করবো না, কারন তিনি সাময়িক বরখাস্ত তো মানেনই নাই, বরং উল্টা অনিয়ম, দূর্নীতি করাসহ আমাকে অপমান করেছেন- দাবী করেন সভাপতি। সভাপতি আরো জানান যে, তিনি গভর্নিং বডির মিটিং ছাড়াই, আমার অনুমতি ছাড়াই, গভর্নিং বডির সকল সদস্যদের স্বাক্ষর ছাড়াই, তিনি সাময়ীক বরখাস্ত থাকা অবস্থায় রেজুলেশন খাতায় নিজেই রেজুলেশন লিখে রেখে জনাব নুরল ইসলাম কিভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিতে পারেন, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না, এটা অনেক বড় ধরনের অন্যায়, দুর্নীতি ও অনেক বড় ধরনের বুকের পাটা আছে তার বলে ধরে নিতে হবে। আগে থেকেই এমন অভ্যাস গড়ে উঠেছে তার, তা না হলে এই ছিলছিলা কিভাবে আমার সময় জারী রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।
জনাব কালাম আরো জানান যে, এখানে আমরা অনুসন্ধান করে ও সভাপতির কার্যকলাপ বিশ্লেষন করে দেখেছি যে, সভাপতি একজন অত্যন্ত সাদা মনের ভালো মানুষ, তিনি শতভাগ দূর্নীতিমুক্ত। অথচ বরখাস্তকৃত সাবেক অধ্যক্ষ নুরল ইসলাম খোদাদাদ শুধু তার নাম ভাঙ্গিয়েই নয়, বরং সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের কথা আমাকে শিখিয়ে দিয়ে বলতে বলেন যে, আমি যদি তা না বলি বা করি, তাহলে তিনি আমার চাকুরীর ক্ষতি করবেন অধ্যক্ষ হিসাবে। কিন্তু এখন আমার ভয় নাই, কারন ঐ দূর্নীতিবাজ যদি আর ফিরতেই না পারেন, তাহলে আমরা শিক্ষককেরা, এলাকাবাসীসহ ভুক্তভোগী সকলেই মুক্ত এই জীন সাদৃস্য সাবেক অধ্যক্ষ নুরল ইসলাম খোদাদাদের কবল থেকে। তিনি যদি ফিরতে না পারেন তাহলে মাদ্রাসার শিক্ষার পরিবেশ ভাল হবে, ছাত্র-ছাত্রী বাড়বে, শিক্ষকেরা ক্লাশে মনোযোগী হবে। এই দূর্নীতিবাজ সাবেক অধ্যক্ষের কবল থেকে মাদ্রাসা পরিচালনা অতি দ্রুত প্রসাশনের হস্তক্ষেপে ফিরিয়ে নিতে হবে। তিনি ফিরে এসে আবারো ভৌতিক দুর্নীতির রাজ্য কায়েম করতে পারবেন কিনা, তা নির্ভর করছে, বর্তমান সভাপতি জনাব মোঃ শহিদুল ইসলামের উপর। যদি সভাপতি জনাব শহিদুল ইসলামের হাত ধরে, সাময়ীক বরখাস্তকৃত সাবেক অধ্যক্ষ আবারো ফিরে আসেন, তাহলে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হবে ও সভাপতি তার স্বচ্ছতা হারাবেন ও তিনি সাবেক অধ্যক্ষ নুরল ইসলামের দুর্নীতির অংশীদার হিসাবে সারাজীবন চিহ্নিত হয়ে থাকবেন এলাকাবাসীসহ সুশীল সমাজের কাছে- এটাই আমার দাবী।