নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার বড়থা ডি আই ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, মো. নুরুল ইসলাম খোদাদাদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে আটক হয়েছে
বলে জানা যায়।
এই বিষয়ে বড়থা ডি আই মাদ্রাসার সভাপতি জনাব শহিদুল ইসলাম এর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান যে, অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল ইসলাম খোদাদাদ আটক হয়েছে এ বিষয়ে আমাকে প্রতিষ্ঠানের কেউ অফিসিয়ালী জানায় নাই, তার আটকের পরে এলাকাবাসী ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করেছি। তার এনজিওর মামলা ছিল সেটাও আমি জানি না বা কোন শিক্ষক আমাকে জানাই নাই। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ অনিয়ম – দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় আমি তাকে ২০২২ সালে প্রথম সতর্কতামূলক চিঠি ও ২০২৩ সালে কারন দর্শানোর নোটিশ দেই। অর্থনৈতিক অনিয়ম প্রসংগে নোটিশ এর বরাত: ইআবি/রেজি/প্রশা/ফা.গ.বয়া-৫১/২০১৭/১৭৬১ তারিখ: ০৩/০২/২০২২ইং। শোকজ দিলেও গভর্নিং বডির কিছু অসাধু সদস্যদের কারণে অধ্যক্ষ শোকজ এর নোটিশ এর কোন জবাব দেয় নাই বলে সভাপতি দাবী করেন।
গভর্নিং বডির কিছু সদস্যের সহযোগিতায় তিনি নিয়োগ বাণিজ্য, টাকা আত্মসাৎ, আমাকে হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করেন আমার পক্ষে দু একজন শিক্ষক যখন কথা বলে তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে শোকজ করেছেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি জানান ও শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন তিনি মাদ্রাসাটিকে দূর্ণীতির আখড়া বানিয়েছেন অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম।
এলাকার স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি সুরমা মাল্টিপারপাস নামের একটি এনজিও থেকে টাকা উত্তোলন করে সেই টাকা পরিশোধ না করায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করলে সে মামলায় তার ৫ মাস কারাদন্ড আদালত। তার উপর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত ৬ মার্চ তাকে থানা পুলিশ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
সেই সাথে তাকে ৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। দীর্ঘদিন ধরে ভূয়া ডাক্তারি সনদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করেছেন। নিয়োগ বানিজ্য করেছেন, ১৫ থেকে ১৬ হাজার ইট বিক্রির ভূয়া রেজুলেশন তৈরি করে মসজিদে দান উল্লেখ করেছেন, চকভবানী মৌজার মো. ইউনুছার রহমানের কাছে অত্র প্রতিষ্ঠানের ২৫ শতাংশ জমি পঁচাত্তর হাজার টাকায় বন্ধক রেখে অহেতুক কারণ দেখিয়ে তিনি নিজেই টাকা গুলো আত্মসাৎ করেন তিনি।
অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল ইসলাম খোদাদাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি জেল হাজতে থাকায় সম্ভব হয় নাই ও তার পরিবারকেও পাওয়া যায় নাই,
এ বিষয়ে বড়থা ডি আই মাদ্রাসার সভাপতি জনাব শহিদুল ইসলাম আরো বলেন অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল ইসলাম কে কয়েকজন কমিটির সদস্য সহযোগিতা করতেছেন এবং তারা আমাকে ফাঁসানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা করতেছে আমি খুব দ্রুত যারা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব, কারণ একজন সাজা প্রাপ্ত আসামি কখনোই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে দাবি করতে পারে না ।কারণ তাকে এর আগেই আমি বহিষ্কার পত্রের নোটিশ পাঠিয়েছি এবং এর সঙ্গে যে সকল শিক্ষক জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে এলাকার স্থানীয় শাকিল হোসেন বলেন অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামের অনিয়ম নিয়োগ বাণিজ্যের অভাব নাই বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত আছেন তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একটি চেক প্রতারণা মামলা দায়ের হয়েছে দীর্ঘদিন পরে তার সাজা হয় তিনি সাজা প্রাপ্ত আসামী কিভাবে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ দাবী করতে পারে না আমরা তার কঠিন শাস্তি চাই এবং তাকে দ্রুত বহিষ্কার করা হোক প্রতিষ্ঠানে নাই কোন ছাত্র কিন্তু কিছু অসাধু শিক্ষকের কারণে প্রতিষ্ঠানে অনেক বদনাম হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এলাকার স্থানীয় মোস্তাকিম হোসেন বলেন সভাপতি জনাব শহিদুল ইসলাম যথেষ্ট পরিমাণ প্রতিষ্ঠানে অর্থনৈতিক ব্যয় করেছেন তিনি প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ লক্ষ টাকা নিজ থেকে বরাদ্দ দিয়েছেন এবং শিক্ষকদের বিপদ-আপদে সবসময় তিনি পাশে থাকেন কিন্তু অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম খোদাদাদের দুর্নীতির কারণে এবং এখানে কিছু শিক্ষক জড়িত থাকার কারণে সভাপতিকে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে তারা ও ম্যানেজমেন্ট কমিটির কিছু সদস্য কারণে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বদনাম হচ্ছে সভাপতি শহিদুল ইসলাম সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই প্রতিষ্ঠানের জন্য যাতে করে আমাদের এলাকার ছোট ভাইবোনদের আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া এবং কোনরকম কোন প্রভাব না পড়ে তিনি জীবন দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই প্রতিষ্ঠানের জন্য বলে জানান তিনি।
বিষয়ে বড়থা ডি আই মাদ্রাসার শিক্ষক মিজানুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের ছাত্রর কমতি নাই বিপুল পরিমাণ ছাত্র আছে, কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় তার দেয়া তথ্য ভিত্তিহীন, মাদ্রাসা আসলে ছাত্রশূন্য ছাত্র নেই তবে আছে ( ৪) জন শিক্ষক( ৩) জন শিক্ষিকা শিক্ষকরা জানান ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল নুরুল ইসলাম আছে কিন্তু প্রতিষ্ঠানে তার কোন দেখা মিলে নাই নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয় জানতে চাইলে এ বিষয়ে শিক্ষক মিজানুর রহমানের মন্তব্য করতে চান নাই। তিনি বলেন কে দিয়েছে অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম খোদাদাদ তিনি বলতে পারবে এ বিষয়ে নিয়োগ দেওয়ার পর থেকেই তিনি উধাও বলে তিনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন, বলেন বড়থা ডি আই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম ও সহ একটি চক্র সভাপতিকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় চেষ্টা করতেছে অধ্যক্ষ এবং আরো দুই একজন মিলে বিভিন্ন নিয়োগ-বাণিজ্য ও দুর্নীতি করে সভাপতির কাছে ধরা পরলে তাকে বহিষ্কার করলে অধ্যক্ষ যখন জেলে যায় অন্য মামলায় একটি চক্র অধ্যক্ষ নেতৃত্বে সভাপতির নামে মিথ্যা অভিযোগ এবং মিথ্যা প্রচারণা করে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায় আমরা চাই অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম খোদাদাদ সহ যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং সেই সাথে আমাদের ছেলে মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য যাতে আমাদের মাদ্রাসা ভালো থাকে এই আশা করি আমরা বলে জানান তিনি।
নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব লুৎফর রহমান সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান আদালতে মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ে যদি রায় হয়ে থাকে তাহলে তাকে বহিষ্কার করতে পারে ম্যানেজমেন্ট কমিটি আর যদি উনি বিজ্ঞ আদালতে আপিল করেন সে ক্ষেত্রে ওনাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে হবে বিষয়টা যেহেতু আমার জানা নাই তারপরও আমি দেখে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব বলে জানান তিনি।